সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ৬ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১
রূপালী বার্তা।।
প্রতিবার মাথাব্যথায় ডাক্তারের শরণাপন্ন হওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই। শতকরা ৯০ ভাগ মাথাব্যথা মারাত্মক কোন ব্যাপার নয়। সাধারণত প্যারাসিটামল ওষুধ খেলে তা চলে যায়। যদি তাতেও না কমে একটু বিশ্রাম, ঠাণ্ডা বরফ স্যাক, শিথিলায়ন প্রক্রিয়ায় তা কমে যাবে।
সাধারণভাবে মাথাব্যথার ওষুধ, কিছু রিলাক্সেশন প্রক্রিয়া মাথাব্যথার মাত্রা কমিয়ে দেবে। কিন্তু একেবারে সারিয়ে তুলবে না, তখনই ডাক্তারের শরণাপন্ন হবেন।
কিছু উপসর্গ আছে যখন মাথাব্যথা সিরিয়াস রোগ বলে মনে হবে তখনই ডাক্তারের কাছে যাওয়া দরকার। যেমন-
# মাথাব্যথা যখন আপনার জীবনের গুণগত মানকে কমিয়ে দেবে বা ফ্যামিলির সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে বাঁধা দেবে। আপনার কাজের ক্ষমতা বা পড়ার ক্ষমতা কমিয়ে দেবে বা জীবনকে অনুভব করতে বাঁধা দেবে।
# যদি মাথাব্যথা সপ্তাহে তিনবারের বেশি হয়।
# ব্যথা যদি হঠাৎ করে ওঠে, বেশি মাত্রায় উঠে, বিশেষ করে ব্যথা হওয়ার আগে আপনি যখন স্বাভাবিক ছিলেন।
# যদি সবচেয়ে খারাপ মাথাব্যথা মনে হয়।
# ঘাড় বা মাথায় আঘাতের পর মাথাব্যথা হলে।
# পঞ্চাশ বছর বয়সের পরে মাথাব্যথা হলে।
# মাথাব্যথার পাশাপাশি চোখে ঝাপসা দেখা, কথা জড়িয়ে যাওয়া, অসাড়তা, শরীরের যেকোন জায়গায় বা হাত-পায়ে দুর্বলতা অনুভব করলে।
# মাথাব্যথার সাথে ‘ঘোর লাগা’ বা ঘুম ঘুম লাগলে।
# মাথাব্যথার সাথে যদি জ্বর, বমিবমি ভাব, দ্রুত শ্বাস-প্রশ্বাস, নাক-কান-গলা চোখে নানা প্রকার উপসর্গ দেখা দিলে।
# মাথাব্যথা যদি ব্যায়াম, কাশি, হাঁচি বা শরীর বাঁকা করলে হয়।
ওষুধ ব্যতীত কীভাবে মাথাব্যথা সারাবেন?
কিছু সাজেশন দেয়া হলো যাতে ওষুধ ছাড়াও মাথাব্যথা কমানো যাবে –
# শিথিলায়ন বা দীর্ঘশ্বাস নেয়ার টেকনিক, সুস্থ শিথিল জিনিস চোখে দৃশ্য হিসেবে আনা, মানসিক চাপ কমানোর বিভিন্ন পদ্ধতি অবলম্বন ও ম্যাসাজ।
# বরফ ঢালা চিকিৎসা। বরফ একটি কাপড়ের পুঁটুলি বানিয়ে মাথায় চাপ দেয়া। মাথাব্যথার প্রথমভাগে এই কাজ যত তাড়াতাড়ি করা হবে ততো তাড়াতাড়ি মাথাব্যথা কম হবে। সাধারণত ব্যথার জায়গাগুলোতে চেপে ধরুন। তাছাড়া ঘাড়ের পেছনে, কপালে, চোয়ালে, মাথার দুইপাশে চাপ দিতে হবে।
# গরমভাপ অনেক সময় শিথিলায়ন প্রক্রিয়ায় সাহায্য করে। গরম পানিতে গোসল করলে শরীরের বিভিন্ন অংশে রিলাক্স হয় ও মাথাব্যথা তাতে কমে যায়।
# অন্ধকার ঘরে বিশ্রাম নিন। পারলে ১৫-২০ মিনিট সময় ঘুমিয়ে নিন। আপনার মাথাব্যথা কমতে এটা সাহায্য করবে।
# আকুপাংচার প্রক্রিয়ায় ব্যথার বিরুদ্ধে শরীর কে সাহায্য করবে।
# কগনিটিভ থেরাপির মাধ্যমে ব্যথার বিরুদ্ধে মনের শক্তি বাড়ানো যায়।
ডা: কে.এম. জাহিদুল ইসলাম
এমবিবিএস(ঢাকা), বিসিএস (স্বাস্থ্য)
এমএস (অর্থোপেডিক সার্জারী) অর্থোপেডিক বিশেষজ্ঞ ও সার্জন
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (পিজি হাসপাতাল) ঢাকা।